জেনে নিন পেঁয়াজের বহু গুণ ও ব্যবহার
পেঁয়াজের বিজ্ঞানস্মত নাম "অলিয়াম সেপা"। মশলা হিসেবে রান্নায় যেমন প্রয়োজনীয় তেমনি ঔষুধ হিসেবে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায়ও ভীষণ উপকারী।
পেঁয়াজে বিদ্যমান উপাদান সমুহ
পুষ্টিবিজ্ঞানীদের ধারণা প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা পেঁয়াজে-- কার্বোহাইড্রেট -১১.০ গ্রাম
- প্রোটিন -১.২ গ্রাম
- আঁশ-০.৬ গ্রাম
- রিবোফ্লাভিন-.০১ মিগ্রা.
- নিকোটিনিক আ্যাসিড-০.৪ মিগ্রা.
- লোহা-০.৭ মিগ্রা.
- ক্যালসিয়াম-১৮০ মিগ্রা.
- ফসফরাস-৫০ মিগ্রা.
- থায়ামিন-.০৮ মিগ্রা.
- ভিটামিন-'সি'-১১ মিগ্রা
পেঁয়াজের ঔষুধী গুণ
১. পুরুষত্ব বৃদ্ধি করে:
পেঁয়াজ পুরুষত্ব বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। দু চা চামচ পেঁয়াজের রস আর দু চা চামচ মধু একসঙ্গে মিশিয়ে নিয়মিত খেলে পুরুষত্ব বৃদ্ধি পাবে।
২. স্মরণশক্তি বাড়ে:
পেঁয়াজ খেলে গলা পরিষ্কার হয়, মুখমণ্ডল পরিষ্কার হয়, দাঁত দুধের মতো সাদা হয়, স্মরণশক্তি বাড়ে এবং সেই সঙ্গে দুর্বল স্নায়ু সতেজ হয়।
৩. অজীর্ণতা নিরসনে:
পেঁয়াজ অজীর্ণ সারায়। পেঁয়াজের রসের সাথে করলার রস মিশিয়ে ছোট সাইজের কাপের ১/২ কাপ খেলে ভীষণ রকমের অজীর্ণও সেরে যায়।৪. শিশুদের ঘুমের সমস্যায়:
মাঝেমাঝে শিশুরা ঘুমের সমস্যায় ভোগে। যেসব শিশুদের ঘুম কম এবং রাত্রিতে ঘুম না আসার জন্য কান্নাকাটি করে তাদের ঘুমের ঔষুধ পেঁয়াজ।“প্রথমে এক লিটার পানি ভালো করে ফুটিয়ে নিয়ে একটু ঠান্ডা করে নিতে হবে। দুটি মাঝারি সাইজের পেঁয়াজ কুচি করে নিয়ে পানিতে ঢেলে ১০ মিনিট রেখে দিতে হবে। এরপর পানি ঠাণ্ডা হলে ছেঁকে নিতে হবে।
খুব ছোট শিশু হলে এক চামচ পানিতে কয়েক ফোটা মধু মিশিয়ে বাচ্চাকে খাইয়ে দিতে হবে।”
৫. কৃমি দূর করে:
যেসব শিশুরা ভাত খেতে শিখে তখন হতেই তারা কৃমি রোগে ভুগতে থাকে। তাদের নিয়মিত এক চামচ করে পেঁয়াজের রস খাওয়ালে কৃমি রোগ ও বদহজম সমস্যা দূর হয়।
৬. ডাইরিয়া :
ডাইরিয়া হলে বারবার মলত্যাগ হয়। বারবার মলত্যাগের ফলে দূর্বলতায় শরীর ঠাণ্ডা হতে থাকে। এ সমস্যায় পেঁয়াজের রসের সঙ্গে আদার রস ও এক চিমটি গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ফিরে আসে ও পেটের সমস্যা দূর হয়ে যায়।
৭. মাথাব্যথা :
গরমের জন্য বা বিভিন্ন কারণে আমাদের মাথাব্যথা করে। এতে পেঁয়াজের টুকরো শুঁকলে আরাম পাওয়া যায়। অথবা পেঁয়াজ বেটে পায়ের তলায় ঘষলেও আরাম পাওয়া যায়।
৮. দাদ ও চুলকানিতে:
পেঁয়াজের রস দাদা ও চুলকানিতে লাগালে উপকার হয়।
৯. ফোঁড়া:
সেদ্ধ পেঁয়াজের পুটলিস বাঁধলে কাঁচা ফোঁড়া পেকে যায়।১০. টিউমার:
গ্লান্ডের জ্বালা বা গ্লান্ড ফোলায় পেঁয়াজ ভেজে মধুর সঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে প্রলেপ দিলে উপকার হয়।
১১. চুলের সমস্যায়:
চুল পড়া সমস্যায় বা চুলের বৃদ্ধি কমে গেলে বা অল্প বয়সে চুল পেকে গেলে পেঁয়াজের রসে মধু মিশিয়ে চুলে মালিশ করতে হবে।এমনকি উঁকুনের হাত হতে বাঁচতেও পেঁয়াজের রসের জুড়ি নেই।
১২. মৌমাছির কামড়ে:
বিছে, বোলতা ও মৌমাছি কামড়ালে আক্রান্ত স্থানে পেঁয়াজ বাটা প্রলেপ লাগাতে হবে।১৩. মূর্চ্ছা বা হিস্টিরিয়ায়:
পেঁয়াজের রস শুঁকলে সুফল পাওয়া যাবে।১৪. কানব্যাথা:
পেঁয়াজের রস হালকা গরম করে কানে দুতিন ফোঁটা ফেলতে হবে।১৫. অর্শ রোগে:
পেঁয়াজ কুচিয়ে টক দই দিয়ে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।সাবধানতা:
পেঁয়াজ কেটে রেখে বাসী না করে টাটকা খেয়ে নেওয়া উচিৎ। পেঁয়াজ বায়ুনাশক। কিন্তু রান্না করা পেঁয়াজ বায়ুকারক। কাঁচা পেঁয়াজ বায়ু সৃষ্টি করে। কিন্তু অনেকক্ষণ ধরে পেঁয়াজ কেটে রাখলে পেঁয়াজের গুণ নষ্ট হয়ে যায়।Conclusion:
আমরা জানলাম পেঁয়াজের গুণাগুণ সম্পর্কে। সবসময় হাতের কাছেই পাওয়া যায় এমন কিছুর যদি এতটা গুণ থাকে তবে আমাদের অসুস্থতা নিয়ে এত চিন্তা কেন?
আল্লাহ চাইলে বিভিন্ন সমস্যা হতে আমরা মুক্তি পেতে পারি পেঁয়াজের মাধ্যমেই। ছোটখাটো সমস্যায় ডাক্তার ও ঔষুধের উপর ভরসা করতে হয় না।
নারী উদ্যোক্তা
পেঁয়াজের বহু গুণ ও ব্যবহার
0 Comments